শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ০৪:৫৫ পূর্বাহ্ন
Headline
ছুটির দিনে বইমেলায় উপচে পড়া ভিড়
আপডেট : শুক্রবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪, ৮:৫৯ অপরাহ্ন

 

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক:

দুচোখ যেদিকে যায় শুধু মানুষ আর মানুষ। দেখলে মনে হবে কোনো বিশেষ অনুষ্ঠান ঘিরে এই গণমানুষের সমাগম। সবার চোখে মুখে আনন্দ আর পোশাক পরিচ্ছদেও উৎসবের ছাপ। চিত্রটি অমর একুশে বইমেলা-২০২৪ এর। চলছে বইমেলার ৯ম দিন। দিনটি শুক্রবার হওয়ায় বেলা ১১টা থেকেই শুরু হয় মেলা। ফলে সকাল থেকেই এখানে জড়ো হচ্ছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। বেলা গড়িয়ে বিকেল হতেই বই মেলায় পা ফেলার জায়গাটুকু পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। তিল ধারণের ঠাঁই নেই বললেই চলে এখানে।

শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মেলা প্রাঙ্গণে ঘুরে এমন চিত্রই লক্ষ্য করা গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও রমনা কালী মন্দির গেটে মানুষের ঢল নেমেছে। দলে দলে মানুষ ভেতরে প্রবেশ করছেন। টিএসসি থেকে গেট দিয়ে প্রবেশ করে মূল প্রাঙ্গণে যেতেই অন্তত ১৫-২০ মিনিট সময় লাগছে দর্শনার্থীদের। মানুষের অতিরিক্ত চাপ থাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও হিমশিম খাচ্ছেন নিরাপত্তা কর্মীরা। তাই মানুষ শুধু তল্লাশি যন্ত্রের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করছে, ব্যক্তিগতভাবে পুলিশকে কারো ব্যাগ বা শরীর পরীক্ষা করতে দেখা যায়নি।

শুক্রবার দিনটি ছুটির দিন হওয়ায় সবাই নিজের পরিবার, পছন্দের মানুষ ও বন্ধুদের সঙ্গে বইমেলায় ঘুরতে আসেন। সকালে থেকেই নানা বয়সের মানুষ ভিড় জমিয়েছেন মেলা প্রাঙ্গণে। তবে মানুষের অত্যাধিক চাপ থাকায় স্টলগুলোতেও বেশ ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বই কেনার থেকে বইয়ের সঙ্গে ছবি তোলা ও সেলফিতে মত্ত থাকতেই দেখা গেছে অনেক দর্শনার্থীকে।

মেলায় সবচেয়ে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে শিশুপ্রহরে। ছুটির দিন হিসেবে সকাল থেকেই চত্বরটিতে হালুম, টুকটুকি শিশুদের নিয়ে মেতেছিল। দুপুর থেকে শিশু প্রহরে সিসিমপুর মঞ্চে চালু ছিল শিশুদের নিয়ে নানা আয়োজন। শিশু চত্বরে শিশুদের বিভিন্ন ধরনের বই নিয়ে স্টল সাজিয়েছে বিভিন্ন প্রকাশনীও।

সাভারের নবীনগর থেকে মেলায় ঘুরতে আসা মেহরাব চৌধুরী মৃদুল বলেন, বইমেলা আমাদের জাতীয় ঐতিহ্যের অংশ। বইমেলা জ্ঞানের একটি আধার। প্রতি বছর বইমেলায় আসি, বই কিনি। তাছাড়া আমার এক বন্ধু এবছর বই বের করেছে। তার সঙ্গে দেখা করে বন্ধুদের নিয়ে ঘুরছি, ভালোই লাগছে।

আজীমপুর থেকে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী মোস্তাকিম আহমেদ রাতুল বলেন, প্রতি বছর বইমেলায় আসি। তবে আজকে এত ভিড় জানলে আসতাম না। মানুষের ভিড়ে পা ফেলা যাচ্ছে না। স্বস্তিতে দাঁড়ানো যাচ্ছে না।

বইমেলার ঘুরতে আসা দুই বাচ্চার বাবা জানান, পুরো সপ্তাহজুড়ে বাচ্চারা চার দেওয়ালের মধ্যে আবদ্ধ থাকে। এজন্য তাদেরকে একটু বিনোদন দিতেই আজকে এখানে এসেছি। কিন্তু মনে হচ্ছে বিকেলে এসে ভুল করেছি। অত্যাধিক মানুষ থাকায় স্বস্তির চেয়ে অস্বস্তি বেশি। তবে বাচ্চারা এতকিছুর পরও আনন্দ পাচ্ছে দেখে ভালো লাগছে।

ঐতিহ্য প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী নূর সোলাইমান ও মাহমুদুল হাসান বলেন, আমাদের ঐতিহ্য প্রকাশনী বরাবরই পাঠকদের কাছে জনপ্রিয়। আজকে ছুটির দিন হওয়ার কারণে বিক্রি আরও বেড়েছে। মেলায় বই কেনার পাশাপাশি মানুষ বই দেখছে, ছবিও তুলছে। ঐতিহ্য স্টলে আশির আহমেদের জাপান কাহিনি ১০ খণ্ড, মোহাইমিন পাটোয়ারীর গল্পে গল্পে গল্পে অর্থনীতি, বুলবুল সরওয়ারের ভ্রমণ বিষয়ক গ্রন্থ, শারমিন আহমেদের নেতা ও পিতা, মহিউদ্দিন আহমেদের তেহাত্তরের নির্বাচন ও চুহাত্তরের দুর্ভিক্ষ বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তারা।

অনন্যা প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী রানা বলেন, আমাদের স্টলে সবসময়ই বিক্রি ভালো থাকে। আজকে ছুটির দিন হওয়ায় বিক্রি বেড়েছে অনেক। হুমায়ুন আহমেদ, আনিসুল হকের বইগুলো অনেক বেশি পাঠকপ্রিয়। ‘হিমু সমগ্র, মিসির আলী’ বরাবরই মানুষের কাছে জনপ্রিয় বলে বিক্রি ভালো।

সময় প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী ফাতিমাতুজ জোহরা অবনী বলেন, ‘ড. এজাজের লেখা আমার হুমায়ুন স্যার, আনিসুল হকের মা, রুশদী শামসের সায়েন্স ফিকশন অদ্ভুত যন্ত্রেরা সব’ বিক্রি হচ্ছে অনেক।

দর্শনার্থী বাড়ায় বেশ আশা প্রকাশ করেছেন প্রকাশকরাও। দুইজন প্রকাশকের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, গত আটদিনের তুলনায় আজকে দর্শনার্থী অনেক বেশি, তাই বিক্রিও বেশি। মানুষ আসছে, বই কিনছে।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
আমাদের পেজ ফলো করুন