বুধবার, ২৮ মে ২০২৫, ০৩:৩১ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
ভিডিও’র কথা বলে ব্লাকমেইল করতে থাকে নাঈম, হত্যা করা হয় পরিকল্পিত ভাবে  পশুর চ্যানেলে নাবিকদের হাত-পা বেঁধে বাণিজ্যক জাহাজের মালামাল লুট রামপালে শিশু কল্যাণ পরিকল্পনা প্রণয়ন কর্মশালা। ডিমলায় প্রাথমিক শিক্ষকদের অনিদৃষ্ট কালের জন্য পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি। পলাশবাড়ী নবাগত Uno মহোদয়ের সাথে ম‌ডেল প্রেসক্লা‌বের সৌজন্য সাক্ষাৎ  ভাঙ্গায় মেয়াদোত্তীর্ণ কেক খেয়ে শিশু অসুস্থের ঘটনায় মাহ্দি সুপারসপকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা জিলহজ্জ মাসের ফজিলত ও ইবাদত! হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী। ক্ষতবিক্ষত দেশের প্রতিটি নাগরিকের ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষায় আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: প্রধান উপদেষ্টা সরকার ও সেনাবাহিনী একসঙ্গে কাজ করছে : সেনা সদর
Headline
ভিডিও’র কথা বলে ব্লাকমেইল করতে থাকে নাঈম, হত্যা করা হয় পরিকল্পিত ভাবে 
আপডেট : মঙ্গলবার, ২৭ মে, ২০২৫, ৫:৪৫ অপরাহ্ন

 

বিশেষ প্রতিনিধি, খুলনা:

নগরীতে যুবক নাঈম মোল্লা হত্যাকান্ডে গ্রেফতার টিকটকার নুসরাত আমিন সুমনা নিজের সম্পৃক্ততার কথা জানিয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক মোঃ আল আমিন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। একই সাথে তার মা নুর নাহার বেগমকেও কারাগারে প্রেরণ করে আদালত। রোববার বিকেলে এ নির্দেশ দেন আদালত।জানা গেছে, নাঈম মোল্লা দীর্ঘ ১০ বছর খুলনা শিপইয়ার্ডে আউটসোর্সিং হিসেবে কর্মরত ছিল। সেখানে কর্মরত থাকাকালীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে টিকটকার নুসরাত আমিন সুমনার সাথে পরিচয় হয়।

 

শিপইয়ার্ড এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, সাতক্ষীরার মুন্সিপাড়া এলাকার বাসিন্দা রুহুল আমিনের মেয়ে এবং একই এলাকার শিমুল হোসেনের স্ত্রী নুসরাত আমিন সুমনা। দাম্পত্য জীবনে তাদের একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। শিপইয়ার্ড মেইন রোড সংলগ্ন মোশারফ হেসেনের বাড়ির দ্বিতীয়তলায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে। চেহারা সুন্দর হওয়ায় টিকটকার হিসেবে ওই এলাকায় বেশ পরিচিতি রয়েছে তার।

জানা যায়, সুমনার একাধিক যুবকের সাথে সম্পর্ক আছে। সে উঠতি বয়সের যুবকদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে এবং টিকটক করে অর্থ উপার্জন করত। প্রয়োজন শেষ হলে ঐসব যুবকদের সাথে তার সম্পর্ক ছিন্ন করত। এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে নাঈম মোল্লার সাথে। নাঈম মোল্লা তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য না জেনে তার সাথে প্রেমে জাড়িয়ে পড়ে এবং শেষ পরিণতি হয় মৃত্যুর মধ্য দিয়ে।

সূত্রটি আরও জানায়, ফেসবুকে পরিচয় হলেও তাদের সম্পর্ক গভীর থেকে গভীরতর হয়। সুমনার বাড়িতে প্রায় যাতায়াত ছিল নাঈমের। তার বাসায় দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করত সে। এক সময়ে বিশেষ অন্তরঙ্গ মুহূর্তের একটি ভিডিও ধারণ করে নিহত নাঈম। যেটি টিকটকার সুমনা জানত না। গত কয়েকদিন আগে সুমনা ও নাঈমের মধ্যে একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে মনোমালিন্য হয়। আর এ কারণে নাঈমকে তার বাসায় এবং তার সাথে যোগাযোগ করতে নিষেধ করে। আর এতে বাঁধ সাধে নাঈম। সুমনাকে ভিডিও’র কথা বলে ব্লাকমেইল করতে থাকে নাঈম। তাকে উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করে সুমনা। এরই ধারাবাহিকতায় অপর এক যুবকের সাথে সম্পর্ক হয় সুমনার। তাকে দিয়ে শাস্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করে সুমনা। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঐ যুবককে বৃহস্পতিবার দুপুরে শিপইয়ার্ড মেইন গেটের সামনে ভাড়া বাড়িতে ডেকে নেয় সুমনা। দুপুরে তারা সেখানে খাওয়া দাওয়া করে। বিকেল ৪টার পর শিপইয়ার্ডে কাজ শেষে নাঈম দুপুরের খাওয়া শেষ করে সুমনার ভাড়া করা বাড়ির আশপাশে ঘুরতে থাকে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নাঈম সুমনার বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। তারপর থেকে আর তাকে দেখা যায়নি বলে সূত্রটি জানায়।

অপর একটি সূত্র জানায়, রাত সাড়ে ৯টার দিকে সুমনা, নাঈম এবং উপস্থিত এক যুবকের মধ্যে ব্যাপক কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে উপস্থিত ওই যুবক ঘরের মধ্যে থাকা একটি রড দিয়ে নাঈমের মাথার বাম পাশে আঘাত করে। ঐ আঘাতে তার মৃত্যু হয়। ঘড়ির কাঁটা যখন ২টা ছুঁইছুঁই তখন উপস্থিত ঐ যুবক এবং নুসরাত আমিন সুমনা নাঈমের মরদেহ শিপইয়ার্ড মেইন রোড সংলগ্ন মোশারফের বাড়ির সামনে হাত-পা এবং মুখ পলিথিন দিয়ে বেঁধে রাস্তায় ফেলে যায়। পুলিশ লাশের পরিচয় পাওয়ার জন্য সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিন্তু সুমনার নতুন বন্ধুর ভয়ে এলাকার কেউ কোন কথা বলেনি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আঃ রহিম বলেন, শুক্রবার লাশ পাওয়ার পর একটি গোপন সূত্র জানায় সুমনার বাড়িতে মৃত যুবকের যাতায়াত ছিল। দুপুরে আমরা তাকে এবং তার মাকে হেফাজতে নেই। কিন্তু তারা হত্যাকান্ডের ব্যাপারে প্রথমে মুখ খোলেনি। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে নিহত যুবকের পরিচয় এবং তার সাথে সম্পর্ক ছিল বলে স্বীকার করে সুমনা। আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে চাইলে রোববার তাদের দু’জনকে আদালতে আনা হলে সুমনা নিজের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি প্রদান করে।উলে­খ্য শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে শিপইয়ার্ড মেইন গেট সংলগ্ন মোশারফের বাড়ির সামে হাত-পা ও মুখ পলিথিন দিয়ে বাঁধা অবস্থায় নাঈমের লাশ পাওয়া যায়। পরদিন ময়না তদন্তের সময়ের তার আপন চাচাতো ভাই লাশের পরিচয় শনাক্ত করে। মৃত নাঈম বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার বাড়ইখালী এলাকার বাসিন্দা আশরাফ আলী মোল্লার ছেলে। সে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে খুলনা শিপইয়ার্ডে প্লাম্বিং শাখায় আউটসোসিং হিসেবে কর্মরত ছিল।

এই বিভাগের আরো খবর
আমাদের পেজ ফলো করুন