

ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি :
ভাঙ্গায় রাতের অন্ধকারে তিন জনকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনার তিন দিন পর মঙ্গলবার (১৩ মে) সকাল ১০ টার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রায়হান শেখ (২৪) নামক আহত আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত রায়হান শেখ ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের থানমাত্তা গ্রামের কৃষক ফখরুদ্দিন শেখের ছেলে।এর আগে ঘটনার দিন শনিবার (১০ মে) দিবাগত রাত ১ টার দিকে গুরুতর আহতদের ভাঙ্গা থেকে ঢাকা নেওয়ার পথে ইয়াছিন খালাসী (১৯) নামক এক জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তিন দিনে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে।
অন্যদিকে ,শনিবার দিবাগত রাতে নিহত ইয়াছিন খালাসী ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের থানমাত্তা গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর খালাসীর ছেলে।
এ ঘটনায় গত রবিবার (১১ মে) নিহত ইয়াছিন খালাসীর পিতা জাহাঙ্গীর খালাসী বাদী হয়ে ভাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আজিমনগর ইউনিয়নের থানমাত্তা গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুটি পক্ষ রয়েছে। এক পক্ষের নেতৃত্ব দেন থানমাত্তা গ্রামের ভুলু খন্দকার (৬৮) ও অপর পক্ষের নেতৃত্ব দেন একই গ্রামের বাদশা শরীফ (৬৩)। এ দুই পক্ষের মধ্যে অতীতে বিভিন্ন সময়ে সংঘাত -সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। নিহত ইয়াছিন খালাসীর পিতা জাহাঙ্গীর খালাসী ভুলু খন্দকারের পক্ষের লোক। পরিবারের অভিযোগ প্রতিপক্ষই এ হত্যার জন্য দায়ী।
থানমাত্তা গ্রামের কয়েকজন জানান, শনিবার (১০ মে) রাত ১০ টার দিকে থানমাত্তা গ্রামের খালের ব্রিজের উপর বসে গল্প করছিল থানমাত্তা গ্রামের জাহাঙ্গীর খালাসির ছেলে ইয়াছিন খালাসী (১৯), একই গ্রামের ফখরুদ্দিন শেখের ছেলে রায়হান শেখ (২৪) ও এলাকায় বেড়াতে আসা মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কাশিমপুর মাঝিকান্দা গ্রামের বাবুল মাতুব্বরের ছেলে শাকিব মাতুব্বর (১৬)। এরমধ্যে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে বেশ কিছু লোক ধারালো অস্ত্র নিয়ে এসে ইয়াছিনসহ তিন জনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পাশের ধানখেতে ফেলে রেখে যায়। এদের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। রোগীদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার জন্য রওনা হয় রোগীর স্বজনরা । ঢাকা নেওয়ার সময় পথে ইয়াছিন খালাসীর মৃত্যু হয়।
নিহত ইয়াছিন খালাসীর পিতা জাহাঙ্গীর খালাসী বলেন, বাদশা শরীফের নির্দেশেই তার ছেলের নেতৃত্বে কিশোর গ্যাং আমার ছেলেসহ তিনজনকে কুপিয়ে নাড়িভুড়ি বের করে দেয়। এর মধ্যে আমার ছেলেসহ দুইজন মারা গেলো। আমি হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, শনিবার রাতে তিন জনকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় মঙ্গলবার রায়হান শেখ নামক আরও একজন ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গিয়েছে । এ ঘটনায় ১১ মে নিহত ইয়াছিন খালাসীর বাবা জাহাঙ্গীর খালাসী বাদী হয়ে ভাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। পূর্ব শত্রুতার জেরে ও আধিপত্যের বিরোধে দুই জন খুনের ঘটনা ঘটলো।