শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ০১:২৪ অপরাহ্ন
Headline
তৌফিক-ই-ইলাহী বিদ্যুৎ খাত ধ্বংস করেছেন, হাসিনাকে কুপরামর্শ দিতেন’
আপডেট : বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৮:১২ অপরাহ্ন

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:

‘বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাত সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করেছেন তৌফিক-ই-ইলাহী। বিদ্যুৎ খাত নিয়ে এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন যেন চাইনিজ খেলনা! চাইনিজ খেলনা দেখতে সুন্দর, কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী না’। আদালতে তৌফিক-ই-ইলাহীর রিমান্ড শুনানিতে এ কথা বলেন বিএনপিপন্থি আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী। তিনি আরও বলেন, ‘তিনি শেখ হাসিনাকে কুপরামর্শ দিতেন। শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচার করতে যারা ভূমিকা রেখেছেন সেই কারিগরদের মধ্যে তিনি একজন।’ বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলী হায়দারের আদালতে বাড্ডা থানায় করা সুমন সিকদার হত্যা মামলায় তৌফিক-ই-ইলাহীর রিমান্ড শুনানি হয়।

মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে ডিবির একটি টিম তৌফিক-ই-ইলাহীকে আটক করে। বুধবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার সাব-ইন্সপেক্টর রেজাউল আলম তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষও তার ১০ দিনের রিমান্ড চান। এরপর বিএনপিপন্থি আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন।

তিনি বলেন, ‘সাবেক অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা। তিনি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাত সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করেছেন। বিদ্যুৎ খাত নিয়ে এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন যেন চাইনিজ খেলনা। চাইনিজ খেলনা দেখতে সুন্দর কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী না। দেখতে লোভনীয় কিন্তু টাইম ভ্যালু, টেকসই না। এভাবে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। দেশের ব্যাপক ক্ষতি করেছেন। ১৫ বছরে কুইক রেন্টালের নামে শত শত মানুষকে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক বানিয়েছেন। মিটারে এক হাজার টাকা রিচার্জ করলে ৫০০ টাকা কেটে নেয়। এই ৫০০ টাকার জন্য কোনও সেবা কিন্তু দিচ্ছে না। গরিব, কৃষকের কাছ থেকে ট্যাক্সের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘অটবির কী যোগ্যতা আছে তাদের কুইক রেন্টালের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজ দিতে হবে? তারা তো কাঠমিস্ত্রি ! তার কোনও অভিজ্ঞতা নাই, ইঞ্জিনিয়ার নাই। তাদের এ কাজ দিয়েছে। বিনিময়ে সুবিধা ভোগ করে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়েছে। ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে অসম চুক্তি করেছে। বিদ্যুতের পার্মানেন্ট সলিউশন না করে কুইক রেন্টালে বিদ্যুৎ উৎপাদনের চমক দেখিয়ে এ খাতকে পঙ্গু করেছে।’

ওমর ফারুক বলেন, ‘হাসিনাকে স্বৈরাচার করতে যারা ভূমিকা রেখেছেন সেই কারিগরদের মধ্যে তিনি একজন। তিনি গণভবনকে বালাখানা বানিয়েছেন। মানুষ হত্যা, ভোট চুরি, অধিকার বঞ্চিত করার জন্য তারা দায়ী। শেখ হাসিনাকে কুপরামর্শ দিতেন। সামিট গ্রুপকে বিশেষ সুবিধা দিয়েছেন। সেই সামিট গ্রুপ লাখ কোটি টাকা নিয়ে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ছেড়ে অন্য দেশে চলে গেছে। বিদ্যুৎ খাতকে ধ্বংস করেছে। ছাত্র আন্দোলনের সময় একটিবারও হাসিনাকে বলেনি হত্যা বন্ধ করেন। আমরা টেলিভিশনে নায়ক-নায়িকার অভিনয় দেখি। তাদের পেছনে থাকেন একজন পরিচালক। সেই পরিচালক হচ্ছে এরা। তার কঠিন শাস্তি হোক! গুম, খুন করে আর কেউ যেন স্বৈরাচার না হয়। এমন অবস্থা না হয় যেন ৩০০ জন এমপি, মন্ত্রীদের যেন পালিয়ে যেতে না হয়!’

এরপর আসামি আসামিপক্ষে মোরশেদ হোসেন শাহীন রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। তিনি বলেন, ‘তৌফিক-ই-ইলাহি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি করেছেন। এজাহারে নাম নাই। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত না। সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। খুবই অসুস্থ। সার্বিক দিক বিবেচনা করে তার রিমান্ড বাতিল চাচ্ছি, সেই সঙ্গে জামিনও।’

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক বলেন, ‘বিবেক যখন মরে যায় তখন শিক্ষার কোনও মূল্য থাকে না, যেকোনও কিছু করতে পারে। সরকারি দায়িত্ব পালনে আমাদের অবস্থান ঠিক রাখতে হবে। উনি (তৌফিক-ই-ইলাহী) যেন নিরাপদে এখান থেকে বের হতে পারেন সেই ব্যবস্থা করে দেবেন।’ এরপর বিচারক তার চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
আমাদের পেজ ফলো করুন