বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:২০ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন শিগগিরই একাধিক বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার প্রস্তাব দেবে কমিশন : আলী রীয়াজ মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম দল সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষনা সোনারগাঁয়ের পিরোজপুরে গণসংযোগ ও উঠান বৈঠকে সাদরিল যানজটের নগরী আজ ফাঁকা, মূল সড়কে বেড়েছে রিকশার চলাচল বিজয়া দশমী : চলছে প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি তারেক রহমান দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন -সংগ্রাম করে যাচ্ছেন : সাদরিল যারাই ষড়যন্ত্র করবে জনগণ তাদের প্রতিহত করবে: সালাহউদ্দিন পাচার হওয়া অর্থের একটি অংশ ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে ফিরিয়ে আনা সম্ভব : অর্থ উপদেষ্টা নির্বাচনে নাশকতার চেষ্টা ঠেকাতে তৎপর র‍্যাব: মহাপরিচালক
Headline
সরকার ও জনগণের মধ্যে বর্তমানে কোনো সেতুবন্ধন নেই : আমীর খসরু
আপডেট : বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৫:৪২ অপরাহ্ন

 

নিজস্ব প্রতিবেদক :

এখন আর কথার ফুলঝুরি দিয়ে রাজনীতি করার দিন শেষ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, বিএনপি তাই সুনির্দিষ্ট নীতি ও পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশ পরিচালনার কথা বলছে। শ্রমিক, কৃষকসহ সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের অংশগ্রহণ, অধিকার, নাগরিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করে অর্থনীতি ও রাজনীতি পরিচালনা করতে হবে। বুধবার (০৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে স্কুল অব লিডারশিপ, ইউএসএ’র বাংলাদেশ শাখার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের মাধ্যমে দেশকে একটি গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে আনা জরুরি ছিল, কিন্তু তা না হওয়ায় দেশ দিন দিন পিছিয়ে যাচ্ছে।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সরকার ও জনগণের মধ্যে বর্তমানে কোনো সেতুবন্ধন নেই, যার কারণে পুলিশ, সরকারি কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, এমনকি ব্যবসা-বাণিজ্যও সঠিকভাবে পরিচালিত হতে পারছে না।

তিনি বলেন, দেশে নতুন কোনো বিনিয়োগ হচ্ছে না, কারণ বিনিয়োগকারীরা আস্থার অভাবে ভুগছেন। সম্প্রতি একটি বিনিয়োগ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও তাতে নতুন কোনো বিনিয়োগ আসেনি; বরং বর্তমান বিনিয়োগকারীরাই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তবে, নির্বাচনের ঘোষণা আসার পর থেকে জাপানিজ ডেলিগেশনসহ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা নড়াচড়া শুরু হয়েছে এবং তারা নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতিতে বিনিয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

বিএনপি এ নেতা দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, গত ১৫-১৬ বছরে একটি গোষ্ঠীকেন্দ্রিক অর্থনীতি গড়ে উঠেছে, যা শুধুমাত্র রাজনীতিতেই নয়, অর্থনীতিতেও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে এবং এর ফলে বাজার ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এ কারণে বিএনপি ‘অর্থনীতির গণতন্ত্রায়ন’ স্লোগান দিয়েছে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, রাজনীতিতে গণতন্ত্রায়ন হলেও অর্থনীতি যদি মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের পকেটে থাকে, তাহলে গণতন্ত্র সফল হবে না। সত্যিকারের গণতন্ত্র তখনই কাজ করবে যখন রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ ও পরিবার—সবক্ষেত্রেই গণতন্ত্রায়ন নিশ্চিত হবে।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী গণতন্ত্রের অর্থ হিসেবে সবার জন্য সমান অধিকারের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রত্যেকটি নাগরিকের অংশগ্রহণের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। শুধু ভোট দিয়ে নির্বাচিত করাটাই একমাত্র গণতন্ত্র নয়, বরং প্রত্যেক নাগরিকের অর্থনীতি, রাজনীতি ও সমাজে অংশগ্রহণের সুযোগ থাকাই প্রকৃত গণতন্ত্র।

গ্রামাঞ্চলে কুটির শিল্পের প্রসারে সরকারের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি থাইল্যান্ডের উদাহরণ দেন, যেখানে সরকার ব্র্যান্ডিং ও বাজারজাতকরণে সহায়তা দিয়ে গ্রামীণ পণ্যকে অ্যামাজন বা আলিবাবার মতো আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে বিক্রি করার সুযোগ করে দিয়েছে। বিএনপিও কুটির শিল্পকে কারিগরি, আর্থিক, ডিজাইন, ব্র্যান্ডিং ও বিপণন প্ল্যাটফর্ম (যেমন অ্যামাজন, আলিবাবা) দিয়ে সহায়তা করার জন্য বাজেট প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগের গুরুত্ব তুলে ধরে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানান, বিএনপি জিডিপির পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত স্বাস্থ্য খাতে এবং সমপরিমাণ শিক্ষা খাতে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বর্তমানে মাত্র এক শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ হচ্ছে, যার একটি অংশ দুর্নীতিতে নষ্ট হচ্ছে। পাঁচ শতাংশ বিনিয়োগ একটি বিশাল অঙ্ক, যা দেশের মানবসম্পদ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তিনি বলেন, শুধু স্কুল-কলেজ নয়, দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন্য স্কিলিং, রি-স্কিলিং ও আপ-স্কিলিং-এর ওপর জোর দেওয়া হবে। এতে করে বিদেশে অদক্ষ শ্রমিকদের ৫০০ ডলারের বদলে দক্ষ শ্রমিকরা ২০০০-১০০০ ডলার বা তারও বেশি আয় করতে পারবে, যা দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহকে বহুগুণ বৃদ্ধি করবে।

১৮ মাসে এক কোটি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রতিশ্রুতিকে ‘রাজনৈতিক বক্তব্য’ না বলে তিনি এটিকে সুচিন্তিত হিসাব-নিকাশের ফল হিসেবে দাবি করেন। স্কিলিংয়ের মাধ্যমে এ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। গ্রামে ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে কল সেন্টার, বিপিও, ডেটা সেন্টার স্থাপন করে প্রায় দুই লাখ তরুণ-তরুণীর ব্যক্তিগত উদ্যোগকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে বিএনপির। আন্তর্জাতিক লেনদেনের জন্য পেপ্যাল বা বিকল্প প্ল্যাটফর্ম চালুর কথাও তিনি জানান।

তিনি মেগা প্রজেক্টের নামে জনগণের অর্থ চুরির বিরোধিতা করে বলেন, দেশের মানুষকে বঞ্চিত করে পকেটে টাকা ভরার জন্য মেগা প্রজেক্টের প্রয়োজন নেই। যা জরুরি, সেটাই করা হবে। উন্নয়নের নামে জনগণকে বঞ্চিত করা কোনো রাজনীতি নয়।

তিনি বলেন, বিএনপি জুলাই অভ্যুত্থানের কোনো কৃতিত্বের দাবিদার নয়, বরং এটি বাংলাদেশের মানুষের কৃতিত্ব। তিনি আরও বলেন, অতীত নিয়ে আলোচনা করে সময়ক্ষেপণ করার কোনো মানে হয় না।

এই বিভাগের আরো খবর
আমাদের পেজ ফলো করুন