শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ০৭:৩০ পূর্বাহ্ন
Headline
বরিশালে ৩ মাসের নবজাতক সন্তান নষ্ট করেও স্বস্তি মেলেনি গৃহবধূর, অবশেষে স্বামীর কাছ থেকে তালাক গ্রহন।
আপডেট : রবিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২৪, ৪:৫৬ অপরাহ্ন

আল আমিন কাজী, বরিশাল : বরিশালে ৩ মাসের নবজাতক নষ্ট এবং তালাক প্রদানের মাধ্যমে সম্পর্ক বিচ্ছেদের বিষয় নিয়ে গৃহবধূর উপর অভিযোগ উঠেছে।
যা বরিশাল জেলার বানারীপাড়া উপজেলার চাখার ইউনিয়নের মোঃ রফিকুল ইসলাম (৪৮) এর ছেলে মোঃ মেহেদী হাসান রাকিব (২৩) এবং একই ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের আশুরাইল গ্রামের মোঃ মিলন হাওলাদার (৪৮) এর মেয়ে মোসাঃ মুন্নী আক্তার (২০) এর সাথে প্রেমের সম্পর্কে গত দু’বছর পূর্বে পারিবারিক মতামতের ভিত্তিতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় মেহেদী হাসান রাকিব ও মোসাঃ মুন্নী আক্তার।
তবে সম্পর্কের দিক দিয়ে উভয় পক্ষে প্রাথমিক পর্যায়ে তেমন কোনো ধরনের পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়নি।

দু’বছর ঘুরতেই সন্তান জন্মদানের বিষয় নিয়ে শুরু হয় পারিবারিক ঝামেলা।
অভিযোগকারী মেহেদী হাসান রাকিব বলেন, গত ৬ মাস পূর্বে আমার স্ত্রী মুন্নী আক্তার বাচ্চা কনসেপ্ট করে। গত ৩ মাস পূর্বে ডাক্তার রিতা রানী শীলের পরিক্ষার মাধ্যমে আমি জানতে পারি আমার স্ত্রী ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। যা নিয়ে আমাদের পরিবারের সবাই খুশি ছিলাম। তবে এ খুশি বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। কেনোনা আমি আমার স্ত্রী মুন্নী আক্তারের কথা রাখতে এবং তার বাবার বাড়িতে বিষয়টি জানানোর জন্য আমার স্ত্রীকে তার বাবার বাড়িতে পাঠাই। কিন্তু সেখানে গিয়ে সে তার মায়ের পরামর্শে সন্তান নষ্ট করে, যা আমাকে জানানো হয়নি।
সন্তান নষ্টের বিষয় নিয়ে কিছুটা ঝামেলার সৃষ্টি হয়। যা ইউপি সদস্য মোঃ রফিকুল ইসলাম (৪৮) এবং গ্রাম সালিশের মাধ্যমে মিমাংসা করা হয়।
বিচার ব্যবস্থায় তারা সিদ্ধান্ত গ্রহন করে বলেন, এখন যেহেতু বাচ্চা নষ্ট করা হয়েছে সেক্ষেত্রে মেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরিক্ষা শেষ করে বাচ্চা গ্রহন করবে। তবে বর্তমানে আমি বাচ্চা গ্রহনের বিষয়টি উল্লেখ করলে মেয়ের মা আমার প্রতি খারাপ আচরন এবং ডিভোর্স দেয়ার হুমকি প্রদান করে।
তবে শালিশ মিমাংসায় বলেছিলেন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পর্যন্ত পড়ানোর পরে আমরা যেন বাচ্চা নেওয়ার নতুন পরিকল্পনা করি।
পরিক্ষা নিকটে থাকায় বাচ্চা নেয়ার বিষয়ে আমি আমার স্ত্রীর সাথে আলোচনা করি। তবে সে সম্পূর্ণভাবে জানিয়ে দেয় বাচ্চা গ্রহণ করলে সে আমার সংসারে থাকবে না। আমার স্ত্রী আমাকে জানান, আপনার সংসারে আমি বাচ্চা গ্রহণ করবো না। নতুবা আপনি আমাকে ডিভোর্স প্রদান করেন। আপনি ডিভোর্স প্রদান না করলে আমি আপনাকে ডিভোর্স প্রদান করবো।
বিষয়টি পূর্বের সালিশগনদের আমি অবগত করি কিন্তু তারা মেয়েকে অনেক বোঝানোর পরেও মেয়ে আমার সংসারে থাকতে রাজি হয়নি। অবশেষে গত ২০ জানুয়ারি রাতে মেয়ে তার দাদি এবং মায়ের সিদ্ধান্তে আমাকে খোলা তালাক দিতে বাধ্য হয়।
উপস্থিত সালিশগন তাকে জিজ্ঞেস করেছিলো তালাক প্রদানের মূল কারন কী? কেনো আমাকে তালাক প্রদান করতে চায়।তবে উপস্থিত সকলের মাঝে মেয়ে এবং পরিবারের সকলে উত্তর দেন ছেলের কিংবা তার পরিবারের কোনো দোষ নেই। আমি এই সংসারে থাকবো না।
মেয়ে কিছুটা দ্বিমত পোষন করলেও দাদি এবং মায়ের অধিক চাপে তালাক কাগজে স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয়।

আমার স্ত্রী এভাবে আমার কাছ থেকে চলে যাওয়ায় মানসিক ভাবে আমি ভালো নেই। গত দু’বছর আমি আমার স্ত্রীর পড়াশোনা থেকে সকল খরচ আমি বহন করেছি। কখনও আমি তাকে কোনো কিছুতে কষ্ট কিংবা অভাব বুঝতে দেইনি।
আমার মতো অনেক পরিবার আছে, যা মেয়ের মায়ের জন্য সাজানো সংসার ভেঙে যাচ্ছে। আমার সন্তান নষ্টের বিষয় নিয়ে গত ৩ মাসে পূর্বে আমি থানায় অভিযোগ করেছিলাম এবং অবশেষে সমাধানও হয়।
তবে বর্তমানে এমন অবস্থা হবে আমি মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না।
বিষয়টি সমাজের জন্য কলঙ্ক জনক কাজ বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনগণ।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
আমাদের পেজ ফলো করুন